CAR

Bangladesh is a Lab of-Social Research

বাংলাদেশ সামাজিক গবেষণার ল্যাব

মানব অস্তিত্বের বিন্যাস হতে শুরু করে মানুষ যতই সভ্যতার দিকে ধাবীত হয়েছে ততই সমস্যা বেড়ে চলেছে। মানুষের সংস্কৃতি পরিবর্তন মানুষ নিজের  সাথে সমস্যাকে নিয়েই এগিয়েছে। মানুষ হয়তো ভাবছে ছবিতে ভিলেন না থাকলে ছবি ভালো হয় না তেমনি সমস্যা না থাকলে মানুষের গতিধারার গতিও বিস্তার লাভ করেনা। তাই সভ্যতার উর্ধ্বগতি ও সমস্যা সমান্তরাল ভাবে চলছে যদিও অবস্থানও ক্ষেত্রের ভিন্নতার জন্য এর একটু তারতম্য ঘটে থাকে। তবু একসময় সমান তালেই তার হিসেব মিলে। মানব সভ্যতা অনেক পুরনো কিন্তু ছবি বানানো বিনোদনের কাজ তো পুরনো নয় তাহলে এমন উদাহরন কোনো অর্থ বহন করে না। সভ্যতার শুরু থেকে সমস্যা চলে আসছে ।যদিও সমস্যা সমাধানে বহু তৎপর ভ’মিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যায়,  তারপরেও সমাধানের সাথে কেমন করে আরেকটা সমস্যা সৃষ্টি হয়ে আরেক দিকে ভিন্ন ছক তৈরী হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়টি বর্ণনামূলক হয়ে আসলেও সম্প্রতি মানব সমস্যার সমাধান গঠনে দৃষ্টিভঙ্গির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হতেছে। দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে গবেষকদের তাও আবার সঠিক সামাজিক গবেষকদের তত্ত¡, মডেল নির্মান, প্রচুর পরিমানে সামাজিক গবেষণাও সমাজের খুটিনাটি বিভন্ন বিষয় বিশ্লেষনের মাধ্যমে।

আমি একজন মাঠ পর্যায়ে গবেষক। বই পড়ার চেয়ে যে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হয় সে বিষয়গুলো পড়া নিয়েই বেশী ব্যস্ত থাকতে হয়। গত ২১ বছর যাবত মাঠ পর্যায়ে ১৫০টির বেশী প্রকল্পে কাজ করতে হয়েছে ছোট-বড় প্রকল্পে। একটা সময় তা নেশায় পরিনত হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলায়ই কাজ করা হয়েছে সবগুলো উপজেলা ঘুুরা হয়নি। তার পরেও নানা ভাবে বাংলাদেশটা মাঠ পর্যায়ে কাজের সুবাধে হেঁটে-হেটে দেখা হয়েছে। সমস্যার পর সমস্যাই, বহু সমস্যা দেখেছি সমাধান করতে পারিনি। প্রকল্প মনেই সমস্যা সৃষ্টি সে লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে একটি কর্মসূচী সম্পর্কে নানাবিধ ভাবে গবেষণার মাধ্যমে তা তলিয়ে সামাধানের পথ প্রসার করা। সামাধান হলো কি হলোনা সেটা বিষয় না, সমাধার জন্য প্রচেষ্টা চালানো। এদেশে স্বাধীনতার পর হতে যদি ধরা হয় ৫০০০ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার সুফল যদি পেয়ে সবাই সুখি হয়ে যেত তাহলে আজ আর মানুষের এ দশা হতোনা। কর্মসূচীর আলোকে দেখা যায় যে, যখন প্রকল্প কর্মসূচী কম ছিল তখনই মনে হয় মানুষ খুব সুখে ছিল। আসলে কি তাই! তাহলে একটা গবেষণা করে দেখা যাক।

আমাদের দেশ একটি জনবহুল দেশ। জনসংখ্যা এদেশের অন্যতম সমস্যা। এভাবে যে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই দেখা যায় যে সমসার কথা বাধ ভাঙ্গা বন্যার মতো আসতে থাকে। নৃতাত্তি¡ক ভাবে আলোচনা করতে গেলে দেখা যায় যে এদেশের সমস্যা বহুকাল আগে থেকে চলে আসছে। পর্যাক্রমে তা ধরাবাহিক ভাবে সমস্যা পর সমস্যা নাকি সমস্যা হতে আরেক সমস্যা তৈরি হয়েই আছে তা ভাবিয়ে তুলে। অনেক সমস্যা আছে যা সমাধানের ক্ষেত্রে কেমন করে সমাধানতো হয়নি বরং নতুন সমস্যা বড় ভাবে দেখা দিয়েছে যা সমাধান না করে পূর্বের অবস্থা থাকাই মনে হয় ভাল ছিল।

মানুষ মাত্রই সমাজে বসবাস করে। সমাজে বসবাস একটা সহজাতপ্র বৃত্তি। এদেশে মানুষ সুন্দর সমাজ নিয়ে বসবাস করে অল্পতেই সুখী ছিল যদিও অর্থনৈতিক ভাবে এতটা গতিশীল ছিলনা। স্থানীয় অর্থনৈতিক চাকা ভালই সচল ছিল ততোটা ধার করা গ্রীজ দিয়ে চলতে হত না। প্রচীনকাল হতেই সুন্দর ও নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে থাকতে পছন্দ করতো। বাহিরে আঘাত খোচা আর অপহিংসা এদেশের সংস্কৃতিতে একটা কঠিন আঘাত দিয়েছে এতে করে সংস্কৃতি একটা ভিন্নভাবে মোড় নিতে শুরু করেছে যা চক্রাকারে এখনও চলছে। এদেশের মানুষের সহজ-সরল জীবন-যাপনের অভ্যস্থতা কেমন জানি কালের আবর্তনে একটা প্লট পরিবর্তনের আভা লাগিয়ে দেয় যেন চোখে ছানি পড়েছে। কে যেন জীবন-যাপনে একটা চোখ উল্টে দিয়ে তাকে অন্যকিছু দেখতে শিখিয়েছে। ফলে নিজের সৃষ্টি চোখটা একটা টেরা হয়ে লাগানো চোখটা ভিন্ন কিছু দেখতে গিয়ে তার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নিজে অচীন পথে চলতে গিয়ে, নিজের স্বত্ত¡ হারিয়ে কেমন জানি একটা দিশেহারা পথে চলতে অভ্যস্ত হয়েছে। এটাই ভাল বা ভাগ্যচক্র হিসেবে ধরে নিয়েছে এ দেশের মানব সমাজ, তার জীবনযাপন,অর্থনীতি কর্মকান্ড। দেখিনা একটু গবেষণা করে কোন দিকে আমাদের জীবন-ব্যবস্থা মোড় নেয়।

বাংলাদেশে বহু সমস্যা তার দিকপাল হিসেব করার আগে আমরা একটু একটু করে কিছু সমস্যার কথা দেখি যা গবেষণার মাধ্যমে এর সুরাহা পাওয়ার মতো। সামাজিক গবেষণার দিক হতে দেখলে দেখা যায় যে বাংলাদেশকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায় সমদ্র উপকূলীয় অঞ্চল, চরাঞ্চল(মধ্যচারাঞ্চলও উত্তর চরাঞ্চল),হাওর অঞ্চল, সমতল ভূমির দরিদ্র জন প্রীত অঞ্চল, পাহাড়ী অঞ্চল, জেলা শহরসূহের অঞ্চল, গ্রামীন জীবনযাপনে স্থানীয় সৃষ্টাঞ্চল।

সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল-ঃ গবেষণা কাজ করতে গিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের জনসাধারনের সাথে এফজিডি, পিআরএ, জরিপ কাজে দেখা গিয়েছে প্রায় ৭৫প্রকার সমস্যার কথা বলেছে জনগন আবার তা কিভাবে সমাধান করা যায় তার কথাও বলেছে। সমস্যার চেয়ে সমাধার কথা উঠে এসেছে বহুগুন। উপকূলীয় অঞ্চলের জন-সাধারনের জীবন জীবিকা ও সামাজিক কর্মকান্ডের বহু কিছু আছে যা বিভিন্ন সংস্থা তাদের বহুমুখী কর্মসংস্থানও দারিদ্র বিমোচনের মাধ্যমে সমাধার করতে না পারলেও কর্মসূচী চালিয়েছে বছরের পর বছর যা প্রকল্পের সীমিত সময়ের মাধ্যমে। তাদের অনেকেই বেইজ লাইন সার্ভে করেছে, মিডটার্ম ইভাল্যুয়েশন করেছে, ফাইনাল ইভাল্যুয়েশন করে তাদের কর্মসূচী সম্পন্ন হয়েছে আবার অনেকের কর্মসূচী বৃদ্ধিকরনও হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে সমস্যার সমাধান হয়েছে কোন সময় তারপর পরক্ষনেই বিপরীতে সমস্যাও অন্যভাবে দেখা দিয়েছে। একটা ছোট বিষয় যা চোখে পড়েছে ও আলোচনায় জানা গেছে উপকূলীয় ব অঞ্চলে দারিদ্র বিমোচন করতে গিয়ে জমিগুলো ধানের পরিবর্তে মাৎস্য চাষের আওতায় এনেছে একটা সময় গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সে জমিগুলো ধানচাষের উপযোগীতা হারিয়েছে। বহু দরিদ্র কৃষক তাদের জমি হারিয়েছে, অনেকেই মহাজনীয় ঋনের দায় শোধ করতে বা পেরে ভিটাবাড়ি হারিয়েছে, অন্য কোথায় স্থানান্তরিত হয়েছে, কেহ বিভিন্ন জেলা শহরে জনচাপের সৃষ্টি করেছে। তার সাথে সমস্যাতো আছেই।

চরাঞ্চল(মধ্যচারাঞ্চলও উত্তর চরাঞ্চল)-ঃ বাংলাদের চরাঞ্চলে প্রায় সবস্থানই গবেষণার কাজে দেখা হয়েছে। দেশের চরাঞ্চলকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় মধ্যচারাঞ্চল ও উত্তর চরাঞ্চল। এ দেশে যমুনা নদীই চর উৎপদানশীল নদী বলে পরিচিত। যদিও অন্যান্য নদীতেও চর জাগে ও চরাঞ্চল হিসেবে গন্য করে। তার পরেও ব্রক্ষ্রপুত্র ও যমুনার বেশ অঞ্চই চরাঞ্চল হিসেবে গন্য করে বেশী কর্মসূচী পরিচালিত হয়ে আসছে। উত্তর বঙ্গ মঙ্গা কবলিত অঞ্চল হিসেবে বলা হয় আসলে গত কয়েক বছরে সেখানে তেমন সে প্রভাব নেই। দারিদ্র যে নেই তা কোন কথা নয়। বইয়ের প্রচলিত ভাষাও গনমানুষের কথায় যে ভাবে প্রচলিত গবেষণার কাজ করতে গিয়ে তেমন দেখা মেলেনি। সামাজিক ভাবে যে তরফায় দারিদ্রের সাথে মোকাবেলা করে টিকে নিজেদের স্থান ধরে রেখেছে এ সব অঞ্চলে, অনেক অঞ্চল দারিদ্র নয় চরাঞ্চলও নয় অন্যদিকে বৈদেশিক আয়ের নির্ভরশীলতা বেশী সে অঞ্চল ততোটা অর্থনৈতিক গতিতে অবদান রাখতে পারেনি বলে আমার বিশ্বাস যা সরেজমিনে দেখা গিয়েছে।

হাওর অঞ্চল -ঃ ভাটি-অঞ্চল হিসেবেই পরিচিত অনেকের কাছে। হাওর অঞ্চলের জীবন ব্যবস্থা নৌপথেই একমাত্র সহজ মাধ্যম ঋতুভেদে। শুস্ক মৌসুমে যাতায়াত খুবই দুস্কর বিষয়। কিলোমিটার কি কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দিতে হয়েছে গবেষণার কাজে মাঠে যেতে। তাদের জীবন ব্যবস্থা নদী, খাল, বিল, ডোবার সাথে নাড়ীবন্ধন। ফলে সে অঞ্চলের লোকদের জীবন জীবিকা অনেক টাই হাওর কেন্দ্রিক। সবচেয়ে বড় হাওর হাকালুকি হাওর, তার পরে টাঙ্গুয়ার হাওর। টাঙ্গুয়ার হাওরের উপর অনেক ধরনের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। আমার গবেষণার কাজে ব্যাপক হাওর অঞ্চলঘুরে বেড়াতে হয়েছে। তার পরেও টাঙ্গুয়ার হাওরে এমন সব কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে যা সামাজিক ভাবে প্রভাব উন্নয়নকর বলে চালাতে গিয়ে সেখানে বহু জীববৈচিত্র বিলুপ সাধন হয়েছে।

সমতল ভূমির দরিদ্রজন প্রীত অঞ্চল-ঃ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসবে গন্য হয়েছে। আসলে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা দেখা যায় যে,দরিদ্র বহুলোক আছে তাদের সংখ্যা নেহায়াৎ কম নয়। যারা সমভূমিতে দারিদ্রতার মধ্যে জীবনযাপন করে তারা অজান্তে রাষ্ট্রীয় একটা বোঝা হিসেবে নিজেদের পরিচয় ধরে রাখে। তারা নিজেদের বহুসমস্যা নিজেরাই জন্ম দেয়। সমাধানের চিন্তা করেনা বহু সমস্যার লেজুর হিসের ঝুলে থাকে। যে কোন সামাজিক,রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াতে চায় গনমানুষ হিসেবে যেটা তার কোন কাজ নয়। গবেষণা করলে দেখা যায় যে তারা নিজেরাই জানেনা তাদের কাজ কি? বঙ্গ ভবন আর গনভবনের খরবতো তাদের কাজ না। চায়ের দোকানে আলাপ-চারিতায় সময় ব্যয় করে দোকান হতে সওদা করে নেয়- পরে টাকা দিবে বলে। যা একজন সাধারণ বিবেকবান মানুষের তালিকা পড়েনা। রাষ্ট্র তার কর্মকৌশলে দারিদ্রের দুষ্টচক্র সৃষ্টি করে আর দরিদ্র জীবন যাপনে কুটকৌশল লোকেরা এ দুষ্টচক্রকে চালনা করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কুটকৌশল করা এর একটা সামাজিক স্তারবিন্যাস আছে গবেষণা করলে দেখা যাবে।

পাহাড়ী অঞ্চল-ঃ দেশের দক্ষিনপূর্বাচলীয় ব্যাপক পাহাড়ী অঞ্চল। উত্তর পূর্বদিকের কিছু টিলা সম্বলিতপাহাড় রয়েছে। দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ী অঞ্চল যদিও আমাদের ভূখন্ডের অন্তভ’ক্ত। গবেষণার ব্যাপক কার্যক্রম সেখানে পরিচালিত হয়েছে বহু স্থান তিন পার্বত্য অঞ্চলে ঘুরে দেখা হয়েছে। সেখানের নৃ-গোষ্ঠীর জীবন ব্যবস্থা ও সামাজিক রীতি-নীতির পার্থক্য হেতু পাহাড়ী ও বাঙ্গালীর অনেকটা যোগসূত্র আছে। তার পরে বহু সমস্যা সবর্দাই লেগে আছে। একই ভূখন্ডের জমি হয়ে বহু স্থান অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। যতটুকু চাষ করা হয় তাও সনাতন পদ্ধতি চাষাবাদ যা দেশের অর্থনৈতিক উন্ননের ব্যাপক যোগান হতে বঞ্চিত থাকছে। আমার গবেষণার কাজে বান্দরবান বোমং রাজার সাথে ইনডেপথ ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলে যে, সঠিক ভাবে যদি পার্বত্য এ অঞ্চল গুলোকে কাজে লাগানো যায় তাহলে প্রায় ৬মাস সমতল ভূমিকে আহার দেওয়া সম্ভব শুধু সুষ্ট পরিকল্পনার আর সঠিক সহযোগীতার মনোভাবের অভাব। তাদের সংস্কৃতি ভিন্ন হলেও নীতি আদর্শে বহু কিছু শিক্ষনীয় আছে তাদের কাছ থেকে।

জেলা সমূহের অঞ্চল-ঃ দেশের ৮টি বিভাগীয় অঞ্চলের সামাজিক জীবন ব্যবস্থা একই হলেও ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডও রীতি নীতিতে। সরকারীভাবে প্রশাসনিক কাঠামো ব্যবস্থা একই। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এসব বিভাগের মধ্যে মানুষের আচরনগত পার্থক্য লক্ষ্যণীয়। দেশের কৃষিনির্ভর পেশায় পরিচালিত এদেশের মানুষ যেখানে কৃষিনির্ভর শিল্পব্যবস্থা গড়ে তুলবে। শুধু প্রযুক্তির জন্য জেলা শহরও রাজধানীতে অস্থায়ী ভাবে আগন্তক হবে। গবেষণায় দেখা যায় মানুষ স্থায়ীও কর্মসংস্থানের জন্য শহরমুখী হয় গ্রাম থেকে এতে করে রাজধানী হয়ে গিয়েছে মাদার অফ এমপ্লাই ইন বাংলাদেশ। এতে করে ”স্থানীয় বহু সংস্কৃতি শহরের প্রকৃত সংস্কৃতিকে ঘোলাটে করছে এবং শহরের ধার করা সংস্কৃতি নিজস্ব অঞ্চলের সংকৃতিকে কলুষিত করেছে”। প্রত্যেক জেলাতে কাজ করতে গিয়ে একটি বিষয় খুব লক্ষ্যণীয় যে, গত ১০ বছর আগেও ঢাকার কথা বললেও একটু নড়েচড়ে বসত। ভাবতো ঢাকার মানুষ। এখন সে কথা এতটা গুরত্বভাবে দেখেনা। খুব কম খানাই আছে যে ঢাকার সাথে যোগাযোগ নেই। আপ্যায়নও সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে যা বিকৃত চোখে লাগার মতো।

গ্রামীন জীবনযাপনে স্থানীয় সৃষ্টাঞ্চলঃ পেশাগত দায়িত্ব পালনে হাজার হাজার গ্রাম পাড়ি দিতে হয়েছে। শত রকমের বিষয় নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। লক্ষাধিক থানায় যেতে হয়েছে বহু ঘটনার দৃষ্টি দিতে হয়েছে। হাজারো সমস্যার কথা শুনতে হয়েছে বহুস্থানে সহায়তায় বিমুখ হতে হয়েছে। ভাল লাগার কিছু নেই তারপরেও দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। বহু গবেষণা কাজে দৈনিক তিন ঘন্টার বেশী ঘুমানোর সুযোগ হয়নি মাসের পর মাস। অনেক সমস্যা চোখে পড়ে গ্রামীন জীবন ব্যবস্থায় কয়েক শত উদাহরন তুলে ধরা যাবে তার পরেও সীমিত করনের কথা ভেবে তা সংক্ষিপ্ত করছি –

এক সময় গ্রামের মানুষ পুকুর,কুপ,পাত কুয়ার পানি খেত(পান করত)। গবেষণা করে টিউবওয়েল বসানো সহ সরকারী ভাবে দায়িত্ব কর্তব্য হয়েই থেমে থাকেনি। শরীরে বহুরোগ সৃষ্টিকারী জীবানুর কথাও উঠে আসে। এখন দেখা গেল টিউবওয়েলে জীবানু হতে কঠিনতর বিষ হলো আর্সেনিক। আবার তা এমনি গবেষণায় নিয়ে এসে দেখানো হল ডাবের পানিতেও আর্সেনিক। এ কেমন গবেষণা সামাজিক জীবনে মানুষের ভীতর প্রভাব ঘটিয়ে দিল।
বহুগ্রামে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি নারী নির্যাতনের আলামত। অনেক পরিবারে ঢাকা হতে আগন্তক বলে নির্যাতন স্তিমিত হয়েছে। ঢাকার লোক এসেছে শুনে বহু মহিলা তালাক হতে রক্ষা পেয়েছে। কিন্ত নারীদের অধিকার এখন এতই যে বর্তমানে দেখা যায় পুরুষ নির্যাতনের স্বীকার হয়। এ কেমন গবেষণার চিত্র নারীদের কতটুুকু অধিকার ভোগ করবে মিটার কি তা স্থির করতে পারেনি। গবেষণা করা প্রয়োজন

ইভটিজিং একটা কথা বেশী পুরনো শব্দ নয় বর্তমানে নয়া প্রচলন । তার বিষয়ে গবেষণা করে আইন করা হয়েছে। বর্তমানে দেখা যায় যে এর বিপরীতে বাল্য বিবাহ, পারিবারিক যৌনাতা, পন্যগ্রাফি দেখার প্রবনতা, অশ্লিল বাক্য, চটি চটকা গল্প সহ উপ যৌনতার শ্রীবৃদ্ধিতা বেড়েছে। এটা কেমন গবেষণা করা হলো এর বিপীতের পরিমান মাপকাটির দেখা হলোননা  তার মানে সঠিক সামাজিক গবেষণা মাথায় নিয়ে কাজ হয়নি।
অর্থ সময়ের অপচয়। কোন উদ্ভুত সমস্যার মোকাবিলায় প্রত্যক্ষভাবে এর প্রয়োগ করার উপায় থাকেনা। আমরা অনেক সময় এমন সব জ্ঞান অর্জন করি সেগুলো দিয়ে তাৎক্ষনিক কোন সমস্যার সমাধান হয়তো হয় আসলে তার স্থায়ী ব্যবহারিক প্রয়োগ ক্ষেত্রে একে আপতদৃষ্টিতে দুর্বল মনে হয় তবু মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞানের মুলভিত্তি বলে ধরে নিয়ে চালিয়ে দেয়। সেগুলো সমস্যা সমাধান, পলিসি নির্ধারনে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনে নুন্যতম সাধারনীকরনে সহায়কক হলেও জোড়ালো ভুমিকায় অবর্তীণ হতে দেখা যায় না।

আসলে সামাজিক গবেষণা যেভাবে হওয়ার কথা বা প্রয়োগিক দিক দেখা সেভাবে না হয়ে তা ক্যারিয়ারের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেকেই এক ধারা হতে অন্যএকটি ধারায় নিয়ে যান এবং তা হয় বন্ধুসহদয় সহযোগিতামুখী সম্পর্ক বজায় রাখার মতো। এতে করে গবেষণার প্রকৃত রস পাওয়া যায়না। স্বাধটা প্রকৃত হয়না হয় ফরমালিন প্রক্রিতির।

Md. Shahidul Islam (MOSI ADAM)
B.Sc(hons.) M.Sc(Geo&Envt.)MSS (Socio&Anth.)(Award)
Field Research Expert